বিসিসি আইন-১৯৯০
বাংলাদেশ গেজেট
অতিরিক্তি সংখ্যা
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত
শনিবার, জানুয়ারী ২০, ১৯৯০
৫ম খন্ড- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের এ্যাক্ট, বিল ইত্যাদি৷
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ
ঢাকা, ২০ শে জানুয়ারী, ১৯৯০/৭ই মাঘ, ১৩৯৬
সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনগুলি ২০শে জানুয়ারী, ১৯৯০ (৭ই মাঘ’ ১৩৯৬) তারিখে রাষ্টপতির সম্মতি লাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনগুলি সর্ব সাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে :-
১৯৯০ সনের ৯ নং আইন
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল স্থাপনকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল স্থাপন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
১। শিরোনামা ও প্রবর্তন ।-
(১) এই আইন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আইন, ১৯৯০ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইন ১৯৮৯ সনের ২৭শে ডিসেম্বর তারিখে বলবৎ হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
২। সংজ্ঞা। - বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে, -
(ক) ‘‘কাউন্সিল” অর্থ আইনের অধীন স্থাপিত কাউন্সিল;
(খ) ‘‘কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন কার্যনির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান;
(গ) ‘‘তথ্য প্রযুুক্তি” বলিতে কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং টেলি-ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরকরণকে বুঝাইবে;
(ঘ) ‘‘প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(ঙ) ‘‘বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি।
৩। কাউন্সিল স্থাপন।
(১) এই আইন বলবৎ হইবার পর যতশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল স্থাপিত হইবে।
(২) কাউন্সিল একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেক্ষে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করার, অধিকারের রাখার ও হস্তান্তর করার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার পক্ষে ইহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে ইহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।
৪। কাউন্সিলের প্রধান কার্যালয়।- কাউন্সিলের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং ইহা প্রয়োজনবোধে যে কোন স্থানে শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
৫। কাউন্সিলের গঠন।- নিম্নলিখিত সদস্য সমননেয়ে কাউন্সিল গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) চেয়ারম্যান;
(খ) ভাইস-চেয়ারম্যান;
(গ) কার্যনির্বাহী চেয়াারম্যান;
(ঘ) অন্যূন আট এবং অনধিক দশ জন অন্যান্য সদস্য।
(২) চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হইবেন এবং তাঁহারা তাহাদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য নূতন ব্যক্তি মনোনীত না হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
(৩) কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান ব্যতীত কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্য সরকার কর্তৃক সরকারী কর্মকর্তা এবং কম্পিউটার প্রযুক্তি ও তারবার্তা যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, অর্থনীতি, শিক্ষা, প্রকৌশলী, বানিজ্য, আইন, শিল্প এবং ব্যাংকিং ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন এবং তাঁহারা তাঁহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বৎসরের মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বেই কোন কারণ না দর্শাইয়া উক্তরূপ যে কোন সদস্যকে যে কোন সময় তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে।
(4) কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে কাউন্সিলের সচিবও হইবেন।
(5) সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সদস্য স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
৬। কাউন্সিলের কার্যাবলী। - কাউন্সিলের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দান করা;
(খ) জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে কম্পিউটারের ব্যবহারিক কাঠামো উন্নয়ন করা এবং কম্পিউটার সংক্রান্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পেশাগত মান উন্নীত করা;
(গ) তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশী নাগরিকগণকে উপযোগী করিয়া গড়িয়া তোলা;
(ঘ) কম্পিউটার সম্পর্কিত মানব-সম্পদ ও দক্ষতা বৃদ্ধি করিয়া উহা বিশ্ববাজারে রপ্তানী করার জন্য উৎসাহ দান করা;
(ঙ) কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জাতীয় কৌশল ও নীতি নির্ধারণ করা ও উহা বাস্তবায়ন করা;
(চ) কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার এবং অন্যান্য সংস্থার সহিত সহযোগিতা করা এবং তৎসম্পর্কে তাহাদিগকে পরামর্শ দান করা;
(ছ) সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার উৎসাহিত করা;
(জ) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত পরামর্শ দান করা;
(ঝ) কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পাঠাগার ও পরীক্ষাগার (ল্যাবরেটরী) নির্মাণ করা এবং উহাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা এবং ঐগুলি সংরক্ষণ করা;
(ঞ) তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা, পর্যালোচ্না করা এবং উহাদের প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
(ট) কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং প্রকল্প ও সাময়িকী প্রকাশ করা;
(ঠ) কম্পিউটার, তথ্য প্রযুক্তি এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের উপর আলোচনা ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং তৎসম্পর্কে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা;
(ড) তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য অনুদান প্রদান করা;
(ঢ) তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী ও বেসরকারী এবং দেশীয় ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করা ও সহযোগিতা করা;
(ণ) কাউন্সিলের কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে দেশী ও বিদেশী যে কোন প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি সম্পাদন করা;
(ত) কম্পিউটার সংক্রান্ত কোন বিশেষ কর্তব্য পালনের জন্য সরকার কর্তৃক আদিষ্ট হইলে উহা পালন করা;
(থ) কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির মান ও স্পেসিফিকেশনস নির্ধারণ করা;
(দ) উপরি-উক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৭। কার্যনির্বাহী পরিষদ।–
(১) কাউন্সিলের একটি কার্যনির্বাহী পরিষদ থাকিবে, যাহা একজন চেয়ারম্যান ও অন্যুন দুইজন সদস্য-সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
(২) কার্যনির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহাদের চাকুরীর মেয়াদ ও শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(৩) কার্যনির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যনির্বাহী-চেয়ারম্যান বলিয়া অভিহিত হইবেন এবং কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কার্য করিবেন।
(৪) কার্যনির্বাহী পরিষদ কাউন্সিলকে উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করিবে, কাউন্সিলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবে এবং কাউন্সিল কর্তৃক অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।
(৫) কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, ক্ষেত্রমত শূন্য পদে নিযুক্ত নূতন কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন সদস্য কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানরূপে কার্য করিবেন।
৮। সভা। -
(১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কাউন্সিল উহার নিজের এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কাউন্সিলের সভা, উহার চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, উহার সচিব কর্তৃক আহুত হইবে এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) কাউন্সিলের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন উহার চেয়ারম্যান বা তাহার অনুপস্থিতিতে উহার ভাইস-চেয়ারম্যান এবং তাঁহাদের উভয়ের অনুপস্থিতিতে, সভায় উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক তাঁহাদের মধ্য হইতে মনোনীত কোন সদস্য।
(৪) কার্যনির্বাহী পরিষদের সকল সভা কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহুত এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৫) কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে,তৎকর্তৃক নির্দেশিত উহার কোন সদস্য।
(৬) শুধুমাত্র কোন সদস্য পদে শূন্যতা বা কাউন্সিল গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে কাউন্সিলের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৯৷ কাউন্সিলের তহবিল।–
(১) কাউন্সিলের একট্ িতহবিল থাকিবে এবং উহাতে সরকারের অনুদান, অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত দান ও অনুদান এবং কাউন্সিল কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য যে কোন অর্থ জমা হইবে৷
(২) এই তহবিল কাউন্সিলের নামে তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল হইতে অর্থ উঠানো যাইবে৷
(৩) এই তহবিল হইতে কাউন্সিলের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে, তবে কাউন্সিল প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এই তহবিলের কিছু অংশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন খাতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে৷
১০৷ ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা। - কাউন্সিল উহার কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে কোন তফসিলি ব্যাংক হইতে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
১১। কোম্পানী গঠন। - কাউন্সিল উহার কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে কম্পিউটার শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত ব্যবসায় বানিজ্যের প্রসারকল্পে কোন কোম্পানী গঠন করিতে বা গঠনে সহায়তা করিতে পারিবে।
১২। কমিটি। - কাউন্সিল উহার দায়িত্ব পালনে উহাকে সহায়তা দানের জন্য এক বা একাধিক কমিটি নিয়োগ করিতে পারিবে।
১৩। তথ্য সংগ্রহ। - কাউন্সিল উহার কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান হইতে এবং কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির সংগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট হইতে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করিতে পারিবে এবং এই ব্যাপারে তাঁহাদের সহায়তা চাহিতে পারিবে।
১৪। প্রবেশ ও পরিদর্শন। -
(১) কাউন্সিলের কার্যাবলী সম্পাদনের প্রয়োজনে কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কাউন্সিলের কোন কর্মকর্তা অন্যূন বাহাত্তর ঘন্টার নোটিশ প্রদান করিয়া যে স্থান,ঘরবাড়ী বা অঙ্গনে কোন কম্পিউটার বা তথ্য প্রযুক্তি স্থাপিত হইয়াছে সেই স্থান, ঘরবাড়ী বা অংগনে দিনের বেলায় প্রবেশ করিতে, উহা পরিদর্শন করিতে এবং উক্ত কম্পিউটার বা তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে তাঁহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
(2) যদি কোন ব্যক্তি যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া উক্ত কর্মকর্তাকে উক্তরূপ প্রবেশ, পরিদর্শন বা তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদান করেন তাহা হইলে, তিনি অনধিক এক হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
১৫। বাজেট। - কাউন্সিল প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কাউন্সিলের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন উহার উল্লেখ থাকিবে।
১৬। হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা। - (১) কাউন্সিল যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অত:পর মহা-হিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কাউন্সিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কাউন্সিলের নিকট পেশ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাঁহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কাউন্সিলের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচিছত অর্থ জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কাউন্সিলের কোন সদস্য, কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান, কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন সদস্য বা কাউন্সিলের যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
১৭। কাউন্সিলের কর্মকর্তা ও কর্মচারী।- কাউন্সিলের কার্যাবলী সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে কাউন্সিল প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা, পরামর্শদাতা, উপদেষ্টা ও অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাঁহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১৮। প্রতিবেদন।–
(১) প্রতি বৎসর ৩০শে জুনের মধ্যে কাউন্সিল তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলীয় খতিয়ান সম্বলিত একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
(2) সরকার প্রয়োজনমত কাউন্সিলের নিকট হইতে যে কোন সময় কাউন্সিলের যে কোন বিষয়ের উপর প্রতিবেদন এবং বিবরণী আহবান করিতে পারিবে এবং কাউন্সিল উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
১৯। দায়মুক্তি। -এই বা কোন বিধি যা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্যে কাউন্সিলের কোন সদস্য, কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান, কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন সদস্য বা কাউন্সিলের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা দায়ের করা যাইবে না।
২০। জনসেবক।- কাউন্সিলের সদস্যগণ, কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যগণ এবং কাউন্সিলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ Penal code (Act XLV of 1860) এর Section 21 এ ``Public servant” (জনসেবক) কথাটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে ``Public servant” (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবেন।
২১। রহিতকরণ ও হেফাজত । -
(১) সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের রিজলিউশন নং এমই/এনসিসি-০১৩/৮৭-৮৪, তারিখ ২৬শে মাঘ, ১৩৯৪/১০ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৮, অত:পর উক্ত রিজলিউশন বলিয়া উল্লেখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উক্তরূপ রহিত হইবার সংগে সংগে-
(৩) উক্ত রিজলিউশন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কম্পিউটার বোর্ড (National Computer Board), অত:পর বিলুপ্ত বোর্ড বলিয়া উল্লেখিত, বিলুপ্ত হইবে;
(৪) বিলুপ্ত বোর্ডের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধাদি এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি নগদ ও ব্যাংকে গচিছত অর্থ এবং অন্য সকল দাবী ও অধিকার কাউন্সিলে হস্তান্তরিত হইবে এবং কাউন্সিল উহার অধিকারী হইবে;
(৫) বিলুপ্ত বোর্ডের যে সকল ঋণ, দায় এবং দায়িত্ব ছিল তাহা কাউন্সিলের ঋণ, দায় এবং দায়িত্ব হইবে;
(৬) বিলুপ্ত বোর্ড কর্তৃক অথবা উহার বিরুদ্ধেকৃত যে সকল মামলা-মোকদ্দমা চালু ছিল, সেই সকল মামলা-মোকদ্দমা কাউন্সিল কর্তৃক অথবা কাউন্সিলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বলিয়া গণ্য হইবে;
(৭) কোন চুক্তি, দলিল বা চাকুরীর শর্তে যাহাই থাকুক না কেন, বিলুপ্ত বোর্ডের পরিচালক এবং সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাউন্সিলে বদলী হইবেন এবং তাঁহারা উহার পরিচালক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তাঁহারা উক্তরূপ বদলীর পূর্বে যে শর্তে চাকুরীতে নিয়োজিত ছিলেন, কাউন্সিল কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে কাউন্সিলের চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, পরিচালক বা কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী, এই প্রবর্তনের তিন মাসের মধ্যে, কাউন্সিলের চাকুরীতে না থাকিবার ইচছা ব্যাক্ত করিতে পারিবেন।
২২। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা। - এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
২৩। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা। - এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই আইন বা কোন বিধির সহিত অসামজ্ঞস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
২৪। রহিতকরণ ও হেফাজত।–
(১) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অধ্যাদেশ, ১৯৮৯ (অধ্যাদেশ নং ২৫,১৯৮৯) এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত অধ্যাদেশের অধীনকৃত সকল কাজ-কর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীনকৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।